কাশির সমস্যা
সমস্যাঃ আমার বয়স ২০, ওজন ৫০ কেজি, উচ্চতা ৫ফুট-৬ইঞ্চি । আমি অনেক দিন ধরে কাশির সমস্যায় ভুগছি। ১০-১৫ মিনিট পর পর গলা ভারী ভারী লাগে। মনে হয় গলায় কী যেন একটা আটকে আছে। কাশি দিলে একটু আরাম লাগে এবং কালো ময়লাযুক্ত একটু কফ বেরিয়ে আসে। আমার কখনো কখনো পাতলা সর্দির মতো শ্লে্না আসে, তাতেও অনেক সময় কালো ময়লা দেখা যায়। ফেলে দিলে গলা পাতলা ও ভালো লাগে।
আমি প্রায়ই সর্দিতে ভুগি। একটু ধুলাবালি লাগলেই নাক চুলকায়, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে পানি পড়ে এবং মাঝেমধ্যে নাক বন্ধ থাকে। আমি যেখানে চাকরি করি, সেখানে যানবাহন ও ধুলাযুক্ত পরিবেশ। আমার কোনো জ্বর নেই। ক্ষুধা স্বাভাবিক, ওজন স্থিতিশীল। আমি কোনো চিকিৎসা নিইনি। আমার সমস্যাটা কী? আমার কালো ময়লাযুক্ত কফ কি যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ, নাকি পরিবেশের কারণে?
রবিউল ইসলাম
নওগাঁ
পরামর্শঃ সম্ভবত আপনি নাকের প্রদাহজনিত রোগ বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগে ভুগছেন। ফলে ‘পোস্ট নাসাল ড্রিপ’-এর কারণে আপনার কাশি হচ্ছে। পোস্ট নাসাল ড্রিপটা কী, জানলেই আপনি আপনার সমস্যা সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
আমাদের নাকের মিউকাস মেমব্রেন বা শ্লে্না ঝিল্লির দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ফলে অনবরত মিউকাস বা শ্লে্না নিঃসৃত হয়, যা নাকের পেছন দিয়ে গলার ভেতর প্রবেশ করে এবং গলবিল বা ফ্যারিংগসের প্যাস্টেরিয়র বা পেছনের দেয়াল দিয়ে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ে। ফলে গলা ভারী, ইরিটেশন বা কখনো কখনো মনে হয় গলার পেছনে কী যেন একটা আটকে আছে। কাশি দিয়ে পরিষ্কার করলে আঠালো সামান্য কফ বেরিয়ে আসে এবং ক্ষণিকের জন্য কিছুটা আরামবোধ হয়। যেহেতু আপনি ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশে কাজ করেন, তাই আপনার কফ ময়লাযুক্ত থাকে। আপনার ময়লাযুক্ত কফ থেকে বুকের যক্ষ্মা হওয়ার আশঙ্কা একেবারে নেই বললেই চলে।
বুকের যক্ষ্মা হলে সাধারণত অল্পমাত্রায় বিকেলে জ্বর থাকে, ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায়, ক্ষুধামান্দ্য হয় ও ওজন কমে যায়, কারও কারও কাশি, কফ এবং এর সঙ্গে রক্ত আসতে পারে, যা আপনার ক্ষেত্রে বহুলাংশেই অনুপস্থিত। আপনার রোগটির সঠিক চিকিৎসা আছে। আপনাকে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো-
-- যতটুকু সম্ভব ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলা।
--অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট যেমন-লরাটাডিন, ডেসলরাটাডিন, সিটিরাজিন, ফিক্সফেনাডিন এবং প্রদাহ কমানোর ট্যাবলেট মনটিলুকাস নিয়মিত সেবন করা।
-- নিয়মিতভাবে নাকের প্রদাহ নিরাময়কারী স্টেরয়েড নাসাল স্প্রে যেমন-বেকলোমিথাসন, ফ্ল্লুটিকাসন, মমেটাসন, বুডিসনাইড ব্যবহার করা।
--প্রয়োজনমতো স্বল্প সময়ের জন্য সঠিক মাত্রায় অক্সিমেটাজলিন নাকের ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করা।
--নাক পরিষ্কার করে ঘুমাবেন।
আপনি অবশ্যই সঠিক ওষুধ এবং এর মাত্রা একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেবেন।
**************************
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা· মো· দেলোয়ার হোসেন
বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক
বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, শাহবাগ, ঢাকা
প্রথম আলো, ১১ জুন ২০০৮
1 মন্তব্য(গুলি):
আচ্ছ, তাহলে এর জন্য কোন বিষরর ডঃ এর কাছে যাবো
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন