BanglaData.Blogspot.Com

BanglaData.Blogspot.Com

বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫

কসরের নামাজের বিধান ও ফজিলত

কসরের নামাজের বিধান ও ফজিলত
মুফতি এনায়েতুল্লাহ
কসর আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো কম করা, কমানো। ইসলামী শরিয়তে কোনো ব্যক্তি যদি ৪৮ মাইল বা তারও বেশি দূরত্বের ভ্রমণে বাড়ি থেকে বের হন, তাহলে তিনি মুসাফির। আর তিনি যদি সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন, তবে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়বেন। আল্লাহ তায়ালা এই সংক্ষেপ করার মাঝে কল্যাণ রেখেছেন। কোরানে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই।’ সূরা নিসা : ১০
কসর নামাজের নিয়ম হলো কেবল চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ যেমন জোহর, আসর ও এশার নামাজ চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়া। এ ক্ষেত্রে মুসাফির ব্যক্তি ইমামতি করলে মুক্তাদিদের আগেই বলে দিতে হবে যে, তিনি মুসাফির এবং দুই রাকাত পড়ে সালাম ফেরাবেন এবং মুকিম নামাজিরা দাঁড়িয়ে বাকি দুই রাকাত পড়ে নেবেন। তবে মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকিম (স্থানীয়) ইমামের পেছনে নামাজ পড়েন, তাহলে ইমামের অনুসরণে তিনিও চার রাকাত পড়বেন। আর মুসাফির অবস্থায় যদি কোনো নামাজ কাজা হয়ে যায় আর তা বাড়ি ফিরে পড়েন, তাহলে কসরই পড়বেন এবং বাড়ি থাকা অবস্থায় কোনো কাজা নামাজ যদি সফরে আদায় করেন, তবে তা পূর্ণ নামাজই পড়তে হবে। মুসাফির ব্যক্তির ব্যস্ততা থাকলে ফজরের সুন্নত ব্যতীত অন্যান্য সুন্নত নামাজ ছেড়ে দেবেন। তবে ব্যস্ততা না থাকলে সুন্নত পড়া উত্তম। তবে দুই রাকাত, তিন রাকাত ফরজ এবং ওয়াজিব নামাজ যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।
কসর নামাজের ফজিলত অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের সার্বিক কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য করেই সহজ বিধান দিয়েছেন। ইসলাম মানুষের কল্যাণের জন্য, মুক্তির জন্য। আর মুসাফির সফরে অনেক সমস্যায় থাকেন, যে কারণে ইসলাম নামাজের মতো এত বড় ইবাদতেও ছাড় দিয়েছে। মূলত এই কসর নামাজের বিধানের মধ্যে মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বড় শিক্ষা রয়েছে তাহলো কোনো অবস্থায়ই ফরজ ইবাদত অলসতার কারণে বা সমস্যা থাকার কারণে পুরোপুরি ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কসরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সফরে নামাজকে কসর কর এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম প্রতিদান।’ বায়হাকি
লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট
মুসাফীর ও কসর নামাজ সংক্রান্ত কিছু আলোচনা
[অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কথা। অবশ্যই শেয়ার করুন]
মুসাফীর কাকে বলে?
মুসাফীর শব্দটি আরবী। এর অর্থ হলো সফরকারী,ভ্রমনকারী।
‘কোন ব্যক্তির স্বাভাবিক বিশ্রাম বজায় রেখে মধ্যম পন্থার পথ চলার তিন বা ততোধিক দিনের ভ্রমন পথ অতিক্রমের ইচ্ছা নিয়ে নিজ
আবাসস্থল থেকে যাত্রা শুরু করাকে সফর বলে।’ আর যিনি সফর করবেন
তাকে বলা হয় ‘মুসাফীর’। মুসাফীরের জন্য শরীয়তের অনেক বিধানই সহজ ও শিথিল করে দেয়া হয়। যেমন...
১. ফরয রোজা ভেঙ্গে ফেলে পরে কাযা করার অনুমতি।
২. চার রাকা’য়াত বিশিষ্ট নামাজ কসর করে দুই রাকায়াত পড়া।
৩. যান বাহনে উপবিষ্ট থাকা অবস্থায় নামায আদায়ের অনুমতি।
৪. যোহর-আসর ও মাগরীব-এশা একত্রে পড়ার অনুমতি। ...
এখানে কসর নামায সংক্রান্ত কিছু আলোচনা করলাম.....
কতটুকু দূরত্ব সফরের নিয়তে কসর হবে?
অধিকাংশ আলেমদের মতে- সাধারণত ৪৮ মাইল দূরত্বের পথ
অতিক্রমের নিয়ত করে ঘর থেকে বের হলে নামায কসর করতে হবে।
কসর শুরু করার স্থান কি হবে?
সফরকারী ব্যক্তি সফরের নিয়তে ঘর থেকে বের হলেও সে নিজ এলাকা/মহল্লায় থাকা অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই নামায আদায় করবে।
যখন সে এলাকা ত্যাগ করবে, তখন থেকে নামাজ কসর করবে।
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করে বলেন, নিশ্চয়ই রাসুল (সা.) (বিদায় হজ্জের নিয়তে) মক্কা সফরের সময় মদীনায় যোহরের নামায চার রাকায়াত আদায় করেছেন। আর (সফর শুরু করে) যুলহুলায়ফা নামক স্থানে পৌছে আসরের নামায দু’রাকায়াত আদায় করেছেন।
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত-১২৫৪)
# এখানে যুলহুলায়ফা নামক স্থানটি মদীনা হতে প্রায় মাইল দূরে অবস্থিত,
যেখানে এসে রাসুল (সা.) নামায কসর করেছেন।
কতদিনের নিয়তে সফর করে গন্তব্যস্থলে পৌছে কসর করবেন? ...
## যে স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সফর করা হবে, সে স্থানে যদি ১৫ দিনের
কম থাকার নিয়ত হয়, তাহলে ব্যক্তি গন্তব্যস্থলে পৌছে তার নামাজ
কসর করবেন।
## আর যদি গন্তব্যস্থলে তার ১৫ দিনের বেশী থাকার নিয়ত হয়, তাহলে সে স্বাভাবিক চার রাকায়াত নামাজই পড়বেন।
## যদি কেহ ১৫ দিনের কম অবস্থানের নিয়তে বের হয়ে ১৩/১৪ দিন পর দেখেন তার প্রয়োজন পূর্ণ হয়নি, তিনি আবারও ১৫ দিনের কম নিয়ত করে কসর নামায পড়তে পারবেন
## অন্য শহরে বাসিন্দাগণ নিজ বাড়িতে সফর করলে কোন কসর
পড়া যাবে না। শুধু যাত্রা পথে কসর করবেন।
## রাসুল (সা.) সফরে ফজরের সুন্নত ও বিতরের তিন রাকায়াত ছাড়া
অন্য কোন সুন্নত নামায পড়েন নি। [অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। অবশ্যই শেয়ার করুন]

3 মন্তব্য(গুলি):

কোন ইমাম ১৫ দিনের নিয়েত করে নামাজ পড়ানোর জন্য এলেন কিন্তু আকস্মিক কারনে বাড়ি ফিরতে হলে কসরের কি নিয়ম আছে।

অনেক কিছু জানল্ম

ধরুন আমার বাড়ি ফেনীতে।আমি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য চিটাগাং আসলাম এবং এখানে আমার আন্টির বাসা আছে।আমার কাজ শেষ করে আন্টির বাসায় দুইদিন থাকবো।এই অবস্থায় কি আমি কসর পড়তে পারবো???

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন