BanglaData.Blogspot.Com

BanglaData.Blogspot.Com

বাংলা তথ্য ভান্ডারে স্বাগতম

সকল তথ্য পাবেন....BanglaData তে

Welcome To BanglaData

Keep visiting @ BanglaDataBlog

Islamic লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Islamic লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০১৬

ভাগ্যগণনা ও জ্যোতিষ বিদ্যা

আমাদের দেশে মানুষ ভবিষ্যত ভালো মন্দ জানার জন্য ভাগ্য গণনা করতে জোতিষবিদ ও গণকের কাছে গমন করে। অথচ অদৃশ্য বস্তু ও ভবিষ্যত বিষয় জানা একমাত্র আল্লাহ সুবাহানাহু তা’আলার জন্যই নির্ধারিত, আল্লাহ বলেন: আপনি বলুন, একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আসমান ও যমীনের কেউ অদৃশ্যের সংবাদ জানেন না। [1]
অন্য কেউ এ বিষয়ে জানার দাবী করা, বা জানার চেষ্টা করা,মুলত: আল্লাহর সংরক্ষিত অধিকারকে খর্ব করার শামিল, যা মুলত: শির্কেরই অংশবিশেষ।আমাদের দেশে জ্যোতিষ বিদ্যা, রাশি নির্ণয়, ভাগ্য গণনা, পাখীর মাধ্যমে ভাগ্য পরীক্ষার
নামে যে সকল কাজ কর্মের ছড়াছড়ি পরিলক্ষিত হয়, তা ভবিষ্যত জানারই অপচেষ্টা মাত্র। এটি মুলত:শির্ক।
বড়  বড় সাইন বোর্ড টাঙিয়ে ভাগ্য গণনা ও রাশি নির্ণয়ের জন্য প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। পত্রিকায় ঘটা করে রাশি নির্ধারণপূর্বক
ভবিষ্যতবাণী করা হয়। কোথাও ভাগ্য নির্ধারণের জন্য যন্ত্রও বসানো হয়েছে। শহরের রাস্তাঘাটে পাখি দিয়েও ভাগ্য নির্ধারণের মিথ্যা অপচেষ্টা চলে। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী অত্যন্ত পরিস্কার, তিনি বলেন: যে ব্যক্তি কোনো গণকের কাছে আসে এবং তাকে কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে, ৪০ দিন পর্যন্ত তার কোনো সালাত কবুল হয় না। [2]
যে ব্যক্তি জ্যোতিষীর কাছে আসলো এবং সে যা বলল তা সত্য মনে করলো, সে মূলত:
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা অবিশ্বাস করলো।’’ [3]
এর অর্থ হচ্ছে সে কাফির। আর তা এ
জন্য যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
প্রতি নাযিল হয়েছে যে, গায়ব
কেবলমাত্র আল্লাহ ই জানেন।
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে:
বল, আমি বলছি না যে, আমার
কাছে আল্লাহর ভাণ্ডারসমূহ
রয়েছে, আমি গায়েবও জানি না।
আমি তোমাদের এ কথাও
বলছি না যে , আমি একজন
ফেরেশতা। আমি অনুসরণ করি শুধু
তাই যা আমার
কাছে ওহী হয়ে আসে।[4]
নির্দিষ্ট তারকা নির্ধারিত
স্থানে উদিত হলে তার
প্রভাবে এই এই কল্যাণ বা অকল্যাণ
হতে পারে, নির্ধারিত মৌসুমের
প্রভাবে বৃষ্টি বা ঝড় হতে পারে
[5] প্রভৃতি যে সব
কথা বার্তা আমাদের সমাজে অহরহ
প্রচলিত
রয়েছে তা পূর্বোল্লেখিত
শির্কেরই অংশ বিশেষ।
রেফানেন্স সমূহঃ
[1] . সূরা নামল: ৬৫।
[2] . আল-ইমাম মুসলিম ইবনুল
হাজ্জাজ আন-নিসাপূরী,
সহীহ মুসলিম, আল-মাকতাবুল
ইসলামিয়াহ, ইসতাম্বুল,
তা.বি, ৪ খ, পৃ. ১৭৫১।
[3] . আবু দাউদ, সোলাইমান ইবন
আশ’আছ, সুনান আবী দাউদ,
দারুল জীল, বৈরুত ১৯৯২, ৪খ, পৃ.
১৪।
[4] সূরা আল আনআম:৫০।
[5] . প্র প্রসঙ্গে বুখারী শরীফে
বর্ণিত হয়েছে:


রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৬

জুমার নামায কতো রাকাত? Answer By আবদুস শহীদ নাসিম

জুমার নামায কতো রাকাত?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম, একটা বিষয় নিয়ে খুব দ্বিদ্বাগ্রস্ত আছি, তা হলো জুমার নামায কতো রাকাত? কাবলাল জুমার চার রাকাত ও জুমার পরের চার রাকাত নামায কি সুন্নাত? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার নামায কিভাবে ও কতো রাকাত পড়তেন? জানালে খুব উপকৃত হবো। ধন্যবাদ। @Nasir Nazim
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। হাদিস থেকে জানা যায়, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে সরাসরি জুমার ফরয দুই রাকাত পড়াতেন। তারপর দুই বা চার রাকাত সুন্নত নামায পড়তেন। তিনি জুমার ফরয নামাযের আগে জুমার কোনো সুন্নত নামায পড়েছেন বা পড়তে বলেছেন বলে প্রমাণ নেই। তবে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায পড়তে বলতেন-যা জুমার নামাযের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
কিছু কিছু ফকীহ্ মনে করেন, জুমার নামায যুহর নামাযের বিকল্প, তাই তাদের মতে যুহরের মতো জুমার ফরযের আগেও সুন্নত নামায পড়তে হবে।
এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রহ. তাঁর সুন্নতে রসূল সংক্রান্ত বিখ্যাত গ্রন্থ 'যাদুল মায়াদে' লিখিছেন:
"তাই যারা যুহর নামাযের উপর কিয়াস করে জুমার পূর্বেও সুন্নত আছে বলে ধরে নেন, তাদের কিয়াস বাতিল। কারণ সুন্নত তো প্রমাণিত হতে হবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা, কাজ ও সমর্থন থেকে, কিংবা খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে। কিন্তু এখানে সেরকম কোনো প্রমাণ নেই।
বরং জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায না পড়ার সুন্নতই রসূল সা. থেকে প্রমাণিত। যেমন, ঈদের নামাযের আগে পরে আর কোনো নামায না পড়াই তাঁর থেকে প্রমাণিত। সুতরাং জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায না পড়াটাই সুন্নত।
যারা জুমার পূর্বে সুন্নত নামায আছে বলে ধারণা করেন, তাঁরা বুখারির ‘জুমার আগে-পরে নামায' অনুচ্ছেদের একটি হাদিসকে দলিল হিসেবে পেশ করেন। এই অনুচ্ছেদে ইমাম বুখারি সনদসহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। তাতে তিনি বলেন : 'রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -
যুহরের পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
যুহরের পরে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
মাগরিবের পরে তাঁর ঘরে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
ইশার পরে দুই রাকাত নামায পড়তেন এবং
জুমার পরে ঘরে এসে দুই রাকাত নামায পড়তেন।'
এই হাদিসটি জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায থাকার প্রমাণ করেনা। হাদিসটি থেকে পরিষ্কার বুঝা যায়, ইমাম বুখারি হাদিসটির শিরোনাম ‘জুমার আগে পরে নামায' দেয়ার অর্থই হলো, যারা মনে করে জুমার আগে নামায আছে, তাদের ধারণা ঠিক নয়।
বুখারির এই হাদিসটি থেকে একথাও সুপ্রমাণিত হয় যে, জুমার নামায যুহরের সংক্ষিপ্ত রূপ নয়, রবং সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নামায। হাদিসে জুমার নামাযকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নামায হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবু দাউদে নাফে রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন: ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমার আগে লম্বা নামায পড়তেন এবং জুমার পরে ঘরে গিয়ে দুই রাকাত নামায পড়তেন।
এই হাদিস জুমার আগে সুন্নত নামায থাকা প্রমাণ করেনা। ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমার আগে যে লম্বা নামায পড়েছেন, তা ছিলো সাধারণ নফল নামায। আযান দেয়া বা ইমাম আসার আগে যে ব্যক্তিই মসজিদে হাযির হবে, তার নফল নামায পড়তে থাকা উত্তম।"
---------------------
০৩.০১.২০১৬ খ্রি.

যাকাত ও সুদের টাকা কবরস্তানের কাজে লাগানো যাবে কি?

যাকাত ও সুদের টাকা
কবরস্তানের কাজে লাগানো যাবে কি?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম।
০১. যাকাতের টাকা কি কবরস্থান এর জন্য জমি কেনা বা স্থান বর্ধিত করার জন্য দান হিসাবে গ্রহণ করা যাবে?
০২. আমার ব্যাংকের হিসাবে জমা হওয়া সুদ-এর টাকা তুলে কবরস্থান/মসজিদ/মাদ্রাসাতে দান করলে কি গ্রহণযোগ্য হবে?
০৩. টাকাটা দান করার উদ্দেশ্য তুললে কি শরিয়ত সম্মত হবে?
@Khandoker Minhus Ahmed
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আপনার প্রশ্নের জবাব হলো:
০১. যাকাতের টাকা কবরস্থানে লাগাতে যাবেন কেন? কবরস্থানের জমি কেনার জন্যে টাকা দেবেন তারা, যারা মৃত্যুর অপেক্ষায় আছেন। কবরস্থানে তো ধনী গরিব সবাইকেই সমাহিত করা হয়, অথচ যাকাত হলো শুধু অভাবীদের টাকা, ধনীদের নয়।
০২. দেশে সুদবিহীন ব্যাংক থাকতে আপনি সুদী ব্যাংকে টাকা রাখবেন কেন? যদি রাখলেনই, তবে তা কবরস্থান এবং মসজিদ-মাদ্রাসায় দিতে যাবেন না। কারণ হারাম জিনিস ভালো কাজে লাগানো যায়না।
০৩. সুদের টাকা দান করলে সে দান বাতিল।
০৪. তবে আপনার একাউন্টে যদি সুদের টাকা ঢুকে থাকে, সে টাকা ব্যাংকে রেখে না দিয়ে অবশ্যি উঠাবেন। টাকাটা দানের নিয়্যত ছাড়া অসহায় লোকদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আবাসনের কাজে দিয়ে দেবেন।
---------------------
০৩.০১.২০১৬ খ্রি.

মাসবুকের সালাত আদায়ের পদ্ধতি কিরূপ?

মাসবুকের সালাত আদায়ের পদ্ধতি কিরূপ?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। শায়খ, একটি মাস'আলা নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। ধরেন, তিন রাক'আত সালাতে আমি তৃতীয় রাক'আতে শরিক হলাম। এখন বাকি দু'রাক'আত আমি কিভাবে আদায় করবো? এরকম চার রাক'আতের সালাতে ২/৩ অথবা ৪ রাকাতে শরীক হলে বাকি সালাতের কিরাত, তাহিয়্যাত ও শেষ জলসার বিধান কেমন হবে? জাযাক আল্লাহ। Afzal Meah
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
০১. যিনি জামাতের সালাতে প্রথম দিকে এক বা একাধিক রাকাত মিস করেন, তাকে বলা হয় 'মাসবুক' (পিছিয়ে পড়া মুক্তাদি)।
০২. মাসবুক যে ক'রাকাতই মিস করবেন, ইমামের সালাম ফেরানোর পর তিনি উঠে দাঁড়াবেন এবং যে ক'রাকাত তার মিস হয়েছে, সেগুলো প্রথম রাকাত থেকে শুরু করে পড়ে নেবেন।
০৩. কেউ যদি তিন রাকাত সালাতের তৃতীয় রাকাতে শরিক হন, তাহলে তিনি ইমামের সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে-
ক. প্রথমে প্রথম রাকাত পড়বেন প্রথম রাকাত যে নিয়মে পড়তে হয় সে নিয়মে।
খ. একাকী প্রথম রাকাত পড়ে তিনি প্রথম তাশাহহুদের বৈঠকে বসবেন। কারণ তিনি ইমামের সাথে ইমামের শেষ রাকাতে যে বসেছিলেন, সেটা ছিলো ইমামের অনুসরণ করার বৈঠক, তার প্রথম তাশাহহুদের বৈঠক নয়।
গ. অতপর দাঁড়িয়ে ছুটে যাওয়া দ্বিতীয় রাকাত পড়ে শেষ তাশাহহুদে বসবেন এবং সালাম ফেরাবেন।
০৪. এই একই নিয়মে পড়বেন দুই এবং চার রাকাতের সালাতে মাসবুক হলেও। ধন্যবাদ।
---------------------
০২.০১.২০১৬ খ্রি.

কোনো মেয়ে কি কোনো ছেলেকে পাবার আশা করতে পারবে?

কোনো মেয়ে কি কোনো ছেলেকে
পাবার আশা করতে পারবে?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। জনাব একটা বিষয়ে জানতে চাইছি। কোনো মেয়ে কি কোনো ছেলেকে ভালোবাসতে পারবে বা তাকে পাবার আশা করতে পারবে? পর্দার বিধান লংঘন না করে কাউকে ভালোবাসা বা পাবার আশা করা কি জায়েয? আশা করি জানাবেন @তাহমিদা তানজিম নুসাইফা
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
হ্যাঁ, একজন মেয়ে পর্দার বিধান লংঘন না করে অবশ্যি একজন ছেলেকে স্বামী হিসেবে পাবার আশা করতে পারে এবং উদ্যোগও গ্রহণ করতে পারে। হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা নিজে উদ্যোগ নিয়ে পরিপূর্ণ সামাজিক নিয়মে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিয়ে করেছেন। এ ছাড়া আরো কিছু মহিলা তাঁর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার জন্যে সরাসরি প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।
---------------------
০২.০১.২০১৬ খ্রি.

চিকিৎসার জন্যে যাকাত দেয়া যাবে কি?

চিকিৎসার জন্যে যাকাত দেয়া যাবে কি?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম। একটা বিষয় জানা খুব জরুরী। কষ্ট করে জানালে আমিসহ আরও অনেকে উপকৃত হতে পারতাম। যখন কোনো ব্যক্তি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন তাঁর চিকিৎসার জন্যে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রয়োজন পড়র। এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির চিকিৎসা খরচ বাবদ যাকাতের অর্থ থেকে সহায়তা দেয়া যাবে কি? সাধারন অবস্থায় সেই ব্যক্তি হয়তো সচ্ছল। শুধুমাত্র এই কঠিন রোগের চিকিৎসার জন্য যাকাত প্রদান করা যাবে কিনা, যে পরিমাণ অর্থ হয়তো ব্যক্তি নিজে বহন করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে যদি দেয়া যায় তবে তা যাকাত প্রদানের কোন খাতের মধ্যে গন্য হবে?
জবাবঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। হ্যাঁ, চিকিৎসার ব্যয় বহন করার মতো অর্থ তার না থাকলে চিকিৎসার জন্যে তাকে যাকাতের অর্থ দেয়া যাবে। এটা মাসাকিন (অভাবী) খাতে যাবে।
---------------------
২৯.১২.২০১৫ খ্রি.

বিড়াল কি নাপাক?

বিড়াল কি নাপাক?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: বিড়াল কি নাপাক? অনেক বাসায় বিড়াল পোষে-এটা কি জায়েয? @M Sazzadur Rahman
জবাব: কোনো কারণে বিড়ালের গায়ে নাপাকি না লাগলে বিড়াল নাপাক নয়। বিড়াল পোষাও নাজায়েয নয়। বিখ্যাত সাহাবি আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বিড়াল পকেটে নিয়ে মসজিদে নববীতে আসতেন এবং রসুলুল্লাহ সা -এর মজলিসে বসতেন। এ কারণে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলতেন 'আবু হুরাইরা'। (বিড়াল ছানার বাবা)।

গোসলের পর অযু করার প্রয়োজন আছে কি?

গোসলের পর অযু করার প্রয়োজন আছে কি?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। জনাব গোসলের সময় যদি এর ফরজগুলো আদায় করা হয় তবে কি নামাযের জন্য গোসলের পর আর অযু করার প্রয়োজন আছে? @Mobashwer Ahmed Noman
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। সুন্নত মতো গোসল করার পদ্ধতি হলো, আপনি প্রথমে নামাযের জন্যে যেভাবে অযু করেন, সেভাবে অযু করে নেবেন শুধু পা ধোয়া ব্যতিত। অতপর গোসল করবেন। এরপর নামায পড়ার জন্যে আর অযু করার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু কোনো কারণে যদি গোসলের আগে অযু করা না হয়ে থাকে। তাতেও অনেক ফকীহর মতে গোসল দ্বারাই অযুর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
---------------------
০৩.০১.২০১৬ খ্রি.

বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫

কসরের নামাজের বিধান ও ফজিলত

কসরের নামাজের বিধান ও ফজিলত
মুফতি এনায়েতুল্লাহ
কসর আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো কম করা, কমানো। ইসলামী শরিয়তে কোনো ব্যক্তি যদি ৪৮ মাইল বা তারও বেশি দূরত্বের ভ্রমণে বাড়ি থেকে বের হন, তাহলে তিনি মুসাফির। আর তিনি যদি সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন, তবে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়বেন। আল্লাহ তায়ালা এই সংক্ষেপ করার মাঝে কল্যাণ রেখেছেন। কোরানে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই।’ সূরা নিসা : ১০
কসর নামাজের নিয়ম হলো কেবল চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ যেমন জোহর, আসর ও এশার নামাজ চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়া। এ ক্ষেত্রে মুসাফির ব্যক্তি ইমামতি করলে মুক্তাদিদের আগেই বলে দিতে হবে যে, তিনি মুসাফির এবং দুই রাকাত পড়ে সালাম ফেরাবেন এবং মুকিম নামাজিরা দাঁড়িয়ে বাকি দুই রাকাত পড়ে নেবেন। তবে মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকিম (স্থানীয়) ইমামের পেছনে নামাজ পড়েন, তাহলে ইমামের অনুসরণে তিনিও চার রাকাত পড়বেন। আর মুসাফির অবস্থায় যদি কোনো নামাজ কাজা হয়ে যায় আর তা বাড়ি ফিরে পড়েন, তাহলে কসরই পড়বেন এবং বাড়ি থাকা অবস্থায় কোনো কাজা নামাজ যদি সফরে আদায় করেন, তবে তা পূর্ণ নামাজই পড়তে হবে। মুসাফির ব্যক্তির ব্যস্ততা থাকলে ফজরের সুন্নত ব্যতীত অন্যান্য সুন্নত নামাজ ছেড়ে দেবেন। তবে ব্যস্ততা না থাকলে সুন্নত পড়া উত্তম। তবে দুই রাকাত, তিন রাকাত ফরজ এবং ওয়াজিব নামাজ যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।
কসর নামাজের ফজিলত অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের সার্বিক কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য করেই সহজ বিধান দিয়েছেন। ইসলাম মানুষের কল্যাণের জন্য, মুক্তির জন্য। আর মুসাফির সফরে অনেক সমস্যায় থাকেন, যে কারণে ইসলাম নামাজের মতো এত বড় ইবাদতেও ছাড় দিয়েছে। মূলত এই কসর নামাজের বিধানের মধ্যে মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বড় শিক্ষা রয়েছে তাহলো কোনো অবস্থায়ই ফরজ ইবাদত অলসতার কারণে বা সমস্যা থাকার কারণে পুরোপুরি ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কসরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সফরে নামাজকে কসর কর এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম প্রতিদান।’ বায়হাকি
লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট
মুসাফীর ও কসর নামাজ সংক্রান্ত কিছু আলোচনা
[অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কথা। অবশ্যই শেয়ার করুন]
মুসাফীর কাকে বলে?
মুসাফীর শব্দটি আরবী। এর অর্থ হলো সফরকারী,ভ্রমনকারী।
‘কোন ব্যক্তির স্বাভাবিক বিশ্রাম বজায় রেখে মধ্যম পন্থার পথ চলার তিন বা ততোধিক দিনের ভ্রমন পথ অতিক্রমের ইচ্ছা নিয়ে নিজ
আবাসস্থল থেকে যাত্রা শুরু করাকে সফর বলে।’ আর যিনি সফর করবেন
তাকে বলা হয় ‘মুসাফীর’। মুসাফীরের জন্য শরীয়তের অনেক বিধানই সহজ ও শিথিল করে দেয়া হয়। যেমন...
১. ফরয রোজা ভেঙ্গে ফেলে পরে কাযা করার অনুমতি।
২. চার রাকা’য়াত বিশিষ্ট নামাজ কসর করে দুই রাকায়াত পড়া।
৩. যান বাহনে উপবিষ্ট থাকা অবস্থায় নামায আদায়ের অনুমতি।
৪. যোহর-আসর ও মাগরীব-এশা একত্রে পড়ার অনুমতি। ...
এখানে কসর নামায সংক্রান্ত কিছু আলোচনা করলাম.....
কতটুকু দূরত্ব সফরের নিয়তে কসর হবে?
অধিকাংশ আলেমদের মতে- সাধারণত ৪৮ মাইল দূরত্বের পথ
অতিক্রমের নিয়ত করে ঘর থেকে বের হলে নামায কসর করতে হবে।
কসর শুরু করার স্থান কি হবে?
সফরকারী ব্যক্তি সফরের নিয়তে ঘর থেকে বের হলেও সে নিজ এলাকা/মহল্লায় থাকা অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই নামায আদায় করবে।
যখন সে এলাকা ত্যাগ করবে, তখন থেকে নামাজ কসর করবে।
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করে বলেন, নিশ্চয়ই রাসুল (সা.) (বিদায় হজ্জের নিয়তে) মক্কা সফরের সময় মদীনায় যোহরের নামায চার রাকায়াত আদায় করেছেন। আর (সফর শুরু করে) যুলহুলায়ফা নামক স্থানে পৌছে আসরের নামায দু’রাকায়াত আদায় করেছেন।
(বুখারী, মুসলিম, মেশকাত-১২৫৪)
# এখানে যুলহুলায়ফা নামক স্থানটি মদীনা হতে প্রায় মাইল দূরে অবস্থিত,
যেখানে এসে রাসুল (সা.) নামায কসর করেছেন।
কতদিনের নিয়তে সফর করে গন্তব্যস্থলে পৌছে কসর করবেন? ...
## যে স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সফর করা হবে, সে স্থানে যদি ১৫ দিনের
কম থাকার নিয়ত হয়, তাহলে ব্যক্তি গন্তব্যস্থলে পৌছে তার নামাজ
কসর করবেন।
## আর যদি গন্তব্যস্থলে তার ১৫ দিনের বেশী থাকার নিয়ত হয়, তাহলে সে স্বাভাবিক চার রাকায়াত নামাজই পড়বেন।
## যদি কেহ ১৫ দিনের কম অবস্থানের নিয়তে বের হয়ে ১৩/১৪ দিন পর দেখেন তার প্রয়োজন পূর্ণ হয়নি, তিনি আবারও ১৫ দিনের কম নিয়ত করে কসর নামায পড়তে পারবেন
## অন্য শহরে বাসিন্দাগণ নিজ বাড়িতে সফর করলে কোন কসর
পড়া যাবে না। শুধু যাত্রা পথে কসর করবেন।
## রাসুল (সা.) সফরে ফজরের সুন্নত ও বিতরের তিন রাকায়াত ছাড়া
অন্য কোন সুন্নত নামায পড়েন নি। [অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। অবশ্যই শেয়ার করুন]

সফরের সময় পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা যাবে কি?

সফরের সময় পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা যাবে কি?

প্রশ্ন: বিমান ভ্রমণের মাধ্যমে এখন কয়েক ঘণ্টায় বহু দূরের দেশে পৌঁছে যাওয়া যায়। প্রশ্ন হল: এখন যেহেতু আর আগের মত সফরে কষ্ট ও পরিশ্রম হয় না, তাহলে কি সফরের সময় কসর নামাজ না পড়ে পূর্ণ নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা যাবে?
উত্তর: আমরা জানি, ইসলামের আহকাম বা ধর্মীয় বিধিবিধান ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের প্রয়োজনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছেন মহান আল্লাহ। সম্ভবত সফরের সময় মানুষের পরিশ্রম ও কষ্টের কথা বিবেচনা করে নামাজ কসর ও রোজা ভাঙার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে সফরের ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে বিঘ্ন ঘটে এবং এ বিপত্তির বিষয়টি মানুষ মেনে নিয়েছে। অর্থাত মানুষ জানে, সফরে গেলে তার প্রতিদিনের খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ইত্যাদির রুটিনে বিঘ্ন ঘটবে। অবশ্য এখন সফরের কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়েছে। তারপরও ঘরের পরিবেশ আর সফরের পরিবেশ এক হয় না।
নিজের দেশে নিজের ঘর কখনো অন্য দেশ বা অন্যের ঘরের সমান হয় না। নিজের বাসস্থানে মানুষ যে আরাম-আয়েশে থাকে সফরে গেলে তা আর থাকে না এবং মানুষ এক ধরণের অস্থিরতার মধ্যে থাকে। কাজেই দেখা যাচ্ছে, এই আধুনিক যুগেও সফরের সমস্যাবলী আগের মতোই বিদ্যমান।
এ ছাড়া, এখনো বহু শহর ও গ্রাম আছে যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা খুবই কম এবং সেখানে সফরে গেলে মানুষকে অনেক কষ্টে সময় কাটাতে হয়। তাই কসরের নামাজ এখনো অনেকের জন্য বড় ধরণের ছাড় বলেই গণ্য হয়। কাজেই কসরের নামাজ ও রোজা ভাঙার মতো ইসলামের নির্দেশাবলী সার্বিকভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
কোন সফরে যদি কোনরকম কষ্ট নাও হয় তাহলেও এ সার্বিক নির্দেশ অমান্য করা যাবে না। অর্থাত নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে সফরে গেলে কসরের নামাজ পড়তেই হবে এবং রোজা রাখা যাবে না।
অবশ্য নামাজ-রোজা সম্পর্কে আল্লাহর এ নির্দেশের পেছনে অন্য কোন কারণও থাকতে পারে, যার সঙ্গে হয়ত সফরের কষ্টের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা সে কারণ জানি না বলে আল্লাহর নির্দেশে পরিবর্তন আনার অধিকার আমাদের নেই।

মুসাফিরের নামাজ

নামাজ-মুসাফিরের নামাজ

আল্লাহ তাআলা বলেন:
 ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺑِﻜُﻢُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَ ﻭَﻻَ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺑِﻜُﻢُ ﺍﻟْﻌُﺴْﺮَ 
অর্থ: “আল্লাহ তোমাদের সহজ চান, কঠিন চান না।” (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫)
ইসলাম একটি সহজ ধর্ম। আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোন দায়িত্ব অর্পন করেন না এবং এমন কোন আদেশ তার উপর চাপিয়ে দেন না, যা পালনে সে অক্ষম। তাই সফরে কষ্টের আশংকা থাকায় আল্লাহ সফর অবস্থায় দুটো কাজ সহজ করে দিয়েছেন।

এক: নামাজ কসর করে পড়া। অর্থাৎ চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দু’রাকাত করে পড়া। অতএব, আপনি সফরকালে যোহর, আসর এবং এশার নামাজ চার রাকাতের পরিবর্তে দু’রাকাত পড়বেন। তবে মাগরিব ও ফজর আসল অবস্থায় বাকি থাকবে। এ দুটো কসর করে পড়লে চলবে না। নামাজে কসর আল্লাহর তরফ থেকে রুখসত তথা সহজিকরণ। আর আল্লাহ যা সহজ করে দেন তা মেনে নেয়া ও সে অনুযায়ী আমল করা আল্লাহর কাছে পছন্দের বিষয়। যেরূপভাবে তিনি পছন্দ করেন আযীমত (আবশ্যিক বিধান) যথার্থরূপে বাস্তবায়িত হওয়া।
পায়ে হেঁটে, জীব-জন্তুর পিঠে চড়ে, ট্রেনে, নৌযানে, প্লেনে এবং মোটর গাড়িতে সফর করার ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই। সফরের মাধ্যম যাই হোক না-কেন, নামাজ কসর করে পড়ার ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব নেই। অর্থাৎ শরীয়তের পরিভাষায় যাকে সফর বলা হয় এমন সকল সফরেই চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজ কসর করে পড়ার বিধান রয়েছে।
দুই: দুই নামায একত্র করে আদায় করা
মুসাফিরের জন্য দুই ওয়াক্তের নামাজ এক ওয়াক্তে জমা করা বৈধ। অতএব, মুসাফির যোহর ও আসর একত্র করে অনুরূপভাবে মাগরিব ও এশা একত্র করে পড়তে পারবে। অর্থাৎ দুই নামাজের সময় হবে এক এবং ঐ একই সময়ে দুই ওয়াক্তের নামাজ আলাদা আলাদাভাবে আদায় করার অবকাশ রয়েছে। যোহরের নামাজ পড়ার পর বিলম্ব না করে আসরের নামাজ পড়বে। অথবা মাগরিবের নামাজ পড়ার পরেই সাথে সাথে এশার নামাজ পড়বে। যোহর-আসর অথবা মাগরিব-এশা ছাড়া অন্য নামাজ একত্রে আদায় করা বৈধ নয়। যেমন ফজর, যোহর অথবা আসর মাগরিবকে জমা করা বৈধ নয়।
মাসনূন যিকরসমূহ
নামাযের পর তিন বার ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি), পড়া সুন্নাত। তারপর এই দোয়া পড়বে:
” ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﻭﻣِﻨْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺗَﺒَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻳَﺎ ﺫَﺍ ﺍﻟﺠِﻼﻝِ ﻭَﺍﻹِﻛْﺮَﺍﻡِ، ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ، ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻻَ ﻣَﺎﻧِﻊَ ﻟِﻤَﺎ ﺃَﻋْﻄَﻴْﺖَ، ﻭَﻻَ ﻣُﻌْﻄِﻲَ ﻟِﻤَﺎ ﻣَﻨَﻌْﺖَ، ﻭَﻻَ ﻳَﻨْﻔَﻊُ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺠَﺪِّ ﻣِﻨْﻚَ ﺍﻟﺠَﺪُّ “
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আনতাস্সালামু ওয়া মিনকাস্ সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল্জালালি ওয়াল ইকরাম, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা লা মানিয়া’ লিমা আ’তাইতা, ওয়া লা মু’তিয়া লিমা মানা’তা, লা ইয়ানফাউ যালজাদ্দি মিনকালজাদ্দু”।
অর্থ, হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময়, আপনার কাছ থেকেই শান্তি আসে। আপনি বরকতময় হে প্রতাপশালী সম্মানের অধিকারী! আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁরই বিশাল রাজ্য এবং তাঁরই সমস্ত প্রশংসা। আর তিনিই সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আপনি যা দান করতে চান তা কেউ রোধ করতে পারে না। আপনার শাস্তি হতে কোন ধনীকে তার ধন রক্ষা করতে পারে না”।
তারপর ৩৩ বার করে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা, প্রশংসা বর্ণনা এবং তাকবীর পড়বে। অর্থাৎ ৩৩ বার ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠﻪِ (সুবহানাল্লাহ), ৩৩ বার ﺍَﻟﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং ৩৩ বার ﺍَﻟﻠﻪُ ﺃَﻛْﺒَﺮْ (আল্লাহু আকবার) পড়বে। সবগুলো মিলে ৯৯ বার হবে অতঃপর একশত পূর্ণ করার জন্য বলবে,
” ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ “
উচ্চারণ: “লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর”।
অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁর বিশাল রাজ্য এবং সমস্ত প্রশংসা। আর তিনিই যাবতীয় বস্তুর উপর শক্তিমান”।
তারপর “আয়াতুল্ কুরসী”,  ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﺣَﺪٌ  “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ”,  ﻗُﻞْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﺮَﺏِّ ﺍﻟْﻔَﻠَﻖِ  “কুল আউযুবি রব্বিল ফালাক”,  ﻗُﻞْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﺮَﺏِّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ  “কুল আউযুবি রব্বিন নাস” পড়বে।
কুলহু আল্লাহু আহাদ, ফালাক, নাস এই তিনটি সূরা ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর তিন বার করে পড়া মুস্তাহাব। উপরে উল্লেখিত জিকির ছাড়া ফজর ও মাগরিবের পর এই দু’আ দশ বার পড়া মুস্তাহাব।
ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻳُﺤْﻲِ ﻭَ ﻳُﻤِﻴْﺖُ ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ
উচ্চারণ: “ লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর”।
অর্থাৎঃ “আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁরই রাজত্ব এবং তাঁরই সমস্ত প্রশংসা। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর তিনিই সকল বস্তুর উপর শক্তিমান”।
এ সমস্ত যিকর ফরয নয়, সুন্নাত।
সুন্নত নামাজ সফর ছাড়া বাড়ীতে অবস্থান কালে বারো রাকআত সুন্নাত নামাজ নিয়মিত আদায় করা সকল মুসলিম নর নারীর জন্য অবশ্যই পালণীয়। আর তা হল যোহরের পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত। মাগরিবের পরে দু’রাকাত। এশার পর দু’ রাকাত ও ফজরের আগে দু’রাকাত।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর অবস্থায় যোহর, মাগরিব ও এশার সুন্নত ছেড়ে দিতেন। তবে ফজরের সুন্নত ও বিতরের নামাজ সফর অবস্থায়ও নিয়মিত আদায় করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।
ইরশাদ হয়েছে:
 ﻟَﻘَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃُﺳْﻮَﺓٌ ﺣَﺴَﻨَﺔٌ 
অর্থ: “নিশ্চয় আল্লাহর রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদশ।” (সূরা আল আহযাব, আয়াত :২১)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻛَﻤﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻤُﻮﻧﻲ ﺃُﺻَﻠِّﻲ
অর্থ: “তোমরা আমাকে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখেছ ঠিক সেভাবে নামাজ পড়”। (বুখারী)
আল্লাহই তাওফিক দাতা।
ﻭﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻰ ﻧﺒﻴﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﻭﻋﻠﻰ ﺁﻟﻪ ﻭﺻﺤﺒﻪ ﺃﺟﻤﻌﻴﻦ .
আমীন

Kosor Namaj সফরে কসর নামাজের বিধিবিধান

সফরের সময় পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা যাবে কি?


প্রশ্ন: বিমান ভ্রমণের মাধ্যমে এখন কয়েক ঘণ্টায় বহু দূরের দেশে পৌঁছে যাওয়া যায়। প্রশ্ন হল: এখন যেহেতু আর আগের মত সফরে কষ্ট ও পরিশ্রম হয় না, তাহলে কি সফরের সময় কসর নামাজ না পড়ে পূর্ণ নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা যাবে?

উত্তর: আমরা জানি, ইসলামের আহকাম বা ধর্মীয় বিধিবিধান ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের প্রয়োজনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছেন মহান আল্লাহ। সম্ভবত সফরের সময় মানুষের পরিশ্রম ও কষ্টের কথা বিবেচনা করে নামাজ কসর ও রোজা ভাঙার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে সফরের ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে বিঘ্ন ঘটে এবং এ বিপত্তির বিষয়টি মানুষ মেনে নিয়েছে। অর্থাত মানুষ জানে, সফরে গেলে তার প্রতিদিনের খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম ইত্যাদির রুটিনে বিঘ্ন ঘটবে। অবশ্য এখন সফরের কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়েছে। তারপরও ঘরের পরিবেশ আর সফরের পরিবেশ এক হয় না।

নিজের দেশে নিজের ঘর কখনো অন্য দেশ বা অন্যের ঘরের সমান হয় না। নিজের বাসস্থানে মানুষ যে আরাম-আয়েশে থাকে সফরে গেলে তা আর থাকে না এবং মানুষ এক ধরণের অস্থিরতার মধ্যে থাকে। কাজেই দেখা যাচ্ছে, এই আধুনিক যুগেও সফরের সমস্যাবলী আগের মতোই বিদ্যমান।

এ ছাড়া, এখনো বহু শহর ও গ্রাম আছে যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা খুবই কম এবং সেখানে সফরে গেলে মানুষকে অনেক কষ্টে সময় কাটাতে হয়। তাই কসরের নামাজ এখনো অনেকের জন্য বড় ধরণের ছাড় বলেই গণ্য হয়। কাজেই কসরের নামাজ ও রোজা ভাঙার মতো ইসলামের নির্দেশাবলী সার্বিকভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।

কোন সফরে যদি কোনরকম কষ্ট নাও হয় তাহলেও এ সার্বিক নির্দেশ অমান্য করা যাবে না। অর্থাত নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে সফরে গেলে কসরের নামাজ পড়তেই হবে এবং রোজা রাখা যাবে না।

অবশ্য নামাজ-রোজা সম্পর্কে আল্লাহর এ নির্দেশের পেছনে অন্য কোন কারণও থাকতে পারে, যার সঙ্গে হয়ত সফরের কষ্টের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা সে কারণ জানি না বলে আল্লাহর নির্দেশে পরিবর্তন আনার অধিকার আমাদের নেই।


কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়- (জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫)।
সফরের নিয়তে বের হয়ে নিজ এলাকা পেরুলে সফরের বিধান শুরু হয়। শহরের ক্ষেত্রে ওই শহরের করপোরেশনের নির্ধারিত সীমানা থেকে সফরের সীমা নির্ধারিত হবে। অনুরূপ সফর থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সঙ্গেই তার সফরের বিধান শেষ হয়ে যাবে- (রদ্দুল মুহতার ২/১২৮)।
আকাশ পথে সফরের ক্ষেত্রেও দূরত্বের হিসাব স্থলভাগে সফরের দূরত্বের পরিমাপে হবে, অর্থাৎ স্থলভাগের ৭৮ কিলোমিটার পরিমাণ দূরত্বের সফর হলে আকাশপথে মুসাফির হবে- (রদ্দুল মুহতার ১/৭৩৫)।
অনুরূপ পার্বত্য এলাকায় সফরের ক্ষেত্রেও সমতলে চলার হিসেবেই হবে, অর্থাৎ পাহাড়ের উঁচু-নীচু ঢালুসহ দূরত্বের হিসাব হবে- (ফাতহুল ক্বাদীর ২/৩১, আল বাহরুর রায়েক ২/২২৯)।
মুসাফিরের বিধান
সফরকারীর জন্য শরিয়তের বিধি-বিধানে কিছু শিথিলতা রয়েছে, যথা চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো দুই রাকাত আদায় করবে, সফরে রোজা না রেখে পরবর্তী সময়ে কাজা করলেও চলবে। অনুরূপ মোজায় মাসাহ করা ইত্যাদি বিধানে সাধারণ অবস্থা থেকে ভিন্নতা রয়েছে।
মুসাফির ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত সফর অবস্থায় চার রাকাত নামাজ পূর্ণ করলে গুনাহ হবে। এ ক্ষেত্রে নামাজ পুনরায় পড়া ওয়াজিব। আর যদি ভুলক্রমে চার রাকাত পূর্ণ করে নেয়, তাহলে যদি সে প্রথম বৈঠক করে থাকে, তাহলে সেজদা সাহু করে নিলে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে, আর যদি প্রথম বৈঠক না করে থাকে তাহলে ফরজ আদায় হবে না, আবারও পড়তে হবে- (বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১)।
মুসাফির ব্যক্তি মুকিম ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে- (আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৪৩)।
মুকিম ব্যক্তি মুসাফির ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজগুলোতে মুসাফির ইমাম সাহেব দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরানোর পর মুকিম মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সুরা পড়া ছাড়া বাকি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।
সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ মুকিম অবস্থায় কাজা করলে 'কসর'ই আদায় করবে, আর মুকিম অবস্থার ছুটে যাওয়া নামাজ সফরে কাজা করলে তা পূর্ণ আদায় করবে- (হেদায়া ১/৮১)
স্থায়ী ও অস্থায়ী আবাসের বিধান
স্থায়ী আবাসস্থল পরিবর্তন করে অন্যস্থানে মূল আবাস গড়লে স্থায়ী বসবাসের জন্য সেখানে না যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে আগের অবস্থানস্থল মৌলিক আবাসন হিসেবে গণ্য হবে না, এমনকি সেখানে তার মালিকানা জায়গা-জমিন থাকলেও নয়, বরং সেখানেও সফরের সীমানা অতিক্রম করে গেলে মুসাফিরই থাকবে- (আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৫২)
কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততধিক অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানা-পত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং মুকিমের বিধান জারি থাকবে- (বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪)।
মহিলারা বিবাহের আগ পর্যন্ত তার বাবার বাড়িতে স্থায়ী আবাস হিসেবে মুকিম থাকবে।
তবে বিবাহের পর যদি স্বামীর বাড়িতে মৌলিকভাবে থাকে এবং বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে, তাহলে স্বামীর বাড়ি তার মৌলিক আবাসন হিসেবে ধর্তব্য হবে এবং বাবার বাড়িতে মুসাফির থাকবে, আর যদি বাবার বাড়িতে মৌলিকভাবে থাকে, তাহলে তা তার মূল অবস্থানস্থল হিসেবেই বাকি থাকবে- (আল বাহরুর রায়েক ২/১২৮, রদ্দুল মুহতার ২/১৩১)। আর পুরুষগণ তার শ্বশুরবাড়িতে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফিরই থাকবে। হ্যাঁ, কেউ যদি সেখানে স্থায়ী আবাস করে নেয়, তাহলে তা ভিন্ন কথা।
মুসাফিরের সুন্নত পড়ার বিধান
মুসাফির ব্যক্তির জন্য তার চলন্ত অবস্থায় বা তাড়াহুড়া থাকলে ফজরের সুন্নাত ছাড়া অন্যান্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক ও স্থির অবস্থায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়তে হবে- (এ'লাউস্ সুনান ৭/১৯১, রদ্দুল মুহতার ১/৭৪২)।





লেখক : ফতোয়া সংকলন
প্রকল্পের গবেষক

মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫

মুসলিম হওয়ার অর্থ কী?

মুসলিম হওয়ার অর্থ কী?

মুসলমানরা বিশ্বাস করে, সূরা আল ইসরা (বনি ইসরাইল) শবে মিরাজের ঘটনার পর মক্কায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
এই সূরায় আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের কয়েকটি মৌলিক অঙ্গীকারের উল্লেখ করেছেন। এই অঙ্গীকারগুলো পূরণ না করে কোনো ব্যক্তি বা দল সফল হতে পারে না। এসব মূল্যবোধের ভিত্তিতে মুসলমানদের জীবনযাপন করতে হয়। আর তাদের মানব জাতিকে এই মূলনীতিগুলোর দিকে আহ্বান জানানো উচিত।
এসব মূলনীতি কেবল বিশেষ একটি গোত্র বা দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং পরিধি ও প্রয়োগের দিক দিয়ে বিশ্বজনীন। এগুলো ‘হিকমাহ’ নামেও অভিহিত, যার অর্থ প্রজ্ঞাপূর্ণ শিক্ষা। যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে এই মূলনীতিগুলো সব মানুষের কল্যাণ ও প্রজ্ঞা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। এগুলো হচ্ছে-
শুধু আল্লাহর ইবাদত
‘তোমার প্রভু আদেশ করেছেন, তোমরা তাঁর ব্যতীত আর কারো বন্দেগী বা ইবাদত করবে না (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩)। এর অর্থ, পরম বাস্তবতা এবং একক উপাস্যরূপে আল্লাহতায়ালার স্বীকৃতি প্রদান, সম্পূর্ণ নিষ্ঠাসহকারে তাঁর ইবাদত করা এবং জীবনের প্রতিটি বিষয়ে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ। একজন মুসলিমের জীবন আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়া ছাড়া কিছু নয়।
আমরা কেবল একত্ববাদীই নই; সেই অদ্বিতীয় স্রষ্টাকেন্দ্রিক জীবন আমাদের। তিনিই আমাদের সার্বক্ষণিক ও চূড়ান্ত ভাবনার বিষয়।
মাতাপিতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দয়ালু হওয়া
‘আর (যাতে তোমরা দেখাও) মাতাপিতার প্রতি দয়া। যদি তাদের একজন কিংবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন, তাদের ব্যাপারে ‘উহ’ পর্যন্ত বলো না, অথবা তাদের ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণভাবে কথা বলো। তাদের প্রতি ভালোবাসার সাথে, অত্যন্ত নম্র ও বিনয়ী আচরণ করো; এবং বলো, হে পালনকর্তা তাদের উভয়ের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছেন (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩-২৪)।
সন্তানের জন্য মাতাপিতার দয়া ও দরদের স্বীকৃতি, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাদের ভালোবাসার প্রতিদানে যথাসাধ্য করার জন্যই এটা।
মাতাপিতার প্রতি সন্তানের ভক্তি হলো মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও দয়া আমাদের জন্য নিছক সামাজিক দায়িত্ব নয়। এটা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতাও বটে।
আত্মীয়, দরিদ্র ও মুসাফিরের প্রতি সদয় হওয়া 
আত্মীয়স্বজনকে তাদের প্রাপ্য দাও, আর অভাবী ও মুসাফিরকে তাদের প্রাপ্য (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬)।
মনে রাখা দরকার, এই পৃথিবীতে আমরা পরস্পর সম্পর্কিত। আমাদের দায়িত্ব কেবল নিজের প্রতি নয়, কিংবা শুধু পরিবারের প্রতিও নয়। অন্যান্য আত্মীয় এবং বৃহত্তর পর্যায়ে, সমাজের প্রতিও আমাদের কর্তব্য রয়েছে।
আমরা একে অপরের মুখাপেক্ষী এবং এই জীবনপথে আমরা সবাই সহযাত্রী। অন্যের জন্য আমরা কী করতে পারি, সেদিকে অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। মুসলমানদের জীবন অবশ্যই সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল হতে হবে। এই দায়িত্বের সূচনা হয় পরিবারে এবং অন্যান্য আত্মীয়ের ক্ষেত্রে। যারা অভাবগ্রস্ত, যাদের প্রয়োজন সাহায্য, এমন সবার প্রতি দায়িত্ব রয়েছে।
অর্থের ব্যাপারে সতর্কতা এবং সম্পদের অপচয় না করা 
আর (তোমার সম্পদ) অপচয় করো না। দেখো, অপচয়কারীরা সর্বদাই শয়তানের ভাই আর সে বরাবরই তার প্রভুর প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।… তুমি একেবারে কৃপণ হয়োও না এবং হয়োও না একেবারে মুক্তহস্তও। তাহলে তুমি তিরস্কৃত, নিঃস্ব হয়ে পড়বে। নিশ্চয়ই তোমার পালনকর্তা বা প্রভু যাকে ইচ্ছা দান করেন অধিক জীবনোপকরণ; আর তিনিই তা সঙ্কুচিতও করে দেন। তিনিই তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত- তিনি দেখছেন সবকিছু (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭, ২৯-৩০)।
অর্থের ব্যাপারে কেউ কৃপণ বা অপচয়ী, কোনোটাই হওয়া উচিত নয়। অপচয় করা অনুচিত; আবার কৃপণও হওয়া ঠিক নয়। ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনে মুসলমান অঙ্গীকারবদ্ধ।
হালাল পন্থায় উপার্জন করা চাই। আর সে অর্থ সঠিকভাবেই ব্যয় করা উচিত। আল্লাহতায়ালা আমাদের যত সম্পদ দিয়েছেন, তার সব ক্ষেত্রেই এই মূলনীতি প্রয়োগ করা সম্ভব। দূরদর্শিতার সাথে এবং বিবেকসম্মত উপায়ে সম্পদের সদ্ব্যবহার মুসলমানদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি।
সন্তানের যত্ন নেয়া
‘তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না, দারিদ্র্যের ভয়ে; আমরা তাদের এবং তোমাদের আমিই জীবনোপকরণ দিই। দেখো, তাদের হত্যা করা মহাপাপ’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩১)।
আমরা যেহেতু মাতাপিতার অধিকারের স্বীকৃতি দিচ্ছি, সন্তানের অধিকারও স্বীকার করে নেয়া উচিত। আমাদের সন্তান আমাদের ভবিষ্যৎ। আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে আমরা সন্তানদের স্বাস্থ্যবান, বুদ্ধিমান এবং নৈতিক দায়িত্বসচেতন হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। তাদের নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশে লালন করার ব্যাপারে আমাদের অঙ্গীকার থাকা দরকার। তাদের জীবনের পাশাপাশি চেতনা, মানসিকতা, নৈতিকতা ও সদাচরণও রক্ষা করতে হবে।
ব্যভিচার ও অবৈধ সম্পর্ক থেকে মুক্ত থাকা
আর অবৈধ যৌন সম্পর্কের নিকটবর্তী হয়ো না। দেখো, এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩২)।
যৌন বিকৃতি ব্যক্তি ও সমাজের সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ। এ ক্ষেত্রে নিয়মকানুন মেনে চললে স্বাস্থ্য ও সুখ এবং নৈতিকতাপূর্ণ সমাজ লাভ করা যায়। বিশুদ্ধ, স্বচ্ছ এবং সামাজিক দায়িত্বশীলতাপূর্ণ জীবনযাত্রার বিষয়ে মুসলমানরা অঙ্গীকারে আবদ্ধ।
ইসলাম শিক্ষা দেয়, ব্যভিচার বা যৌন অনাচারের ধারেকাছেও যাওয়া উচিত নয়। এর তাৎপর্য হলো- নারী-পুরুষের পোশাকের ব্যাপারে যথাযথ বিধিবিধান, মিশ্রসমাজে সঠিক আচরণ এবং সামাজিক সম্পর্ক ও বিনোদনের বেলায় যথার্থ নিয়ন্ত্রণ।
প্রতিটি জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ন্যায়বিচার ব্যতীত হত্যা না করা
‘আর হত্যা করো না সে জীবন, যা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন সঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে’। (বনি ইসরাইল ৩৩ নং আয়াত)
এর অর্থ হলো, সব জীবনের পবিত্রতা স্বীকার করে নিতে হবে। জীবনকে অচল করে দিতে পারে, এমন কোনো কাজই করা যাবে না। আগ্রাসন ও সন্ত্রাস পরিহার করতে হবে। কারণ, এসব দোষ হত্যাকাণ্ডের দিকে মানুষকে পরিচালনা করে থাকে। প্রতিটি মুসলিমকে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বনের জন্য অঙ্গীকার করতে হবে। সংলাপ ও আলোচনার মধ্য দিয়ে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত নিরসন করতে হবে- হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে নয়। অবশ্য, ন্যায়বিচার বহাল রাখতে হবে। কারণ সঠিকভাবে শাস্তি দিলে নিরাপত্তা লাভ করা যায় এবং রক্ষা পায় জীবন।
ইয়াতিমের যত্ন নেয়া
ইয়াতিমের সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না, এর উন্নতি বিধানের উদ্দেশ্য ছাড়া; যে পর্যন্ত না সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৪)।
ইয়াতিমসহ যারা সহজেই বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে, তাদের সবার যত্ন নেয়া জরুরি। তাদের অধিকারগুলো স্বীকার করে নিতে হবে এবং সব ধরনের ক্ষতির হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে হবে। তরুণ, গরিব, দুর্বল ও প্রতিবন্ধীদের যত্ন নেয়ার জন্য যেকোনো মুসলমান গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। দয়া ও করুণা একজন মুসলমানের মৌলিক অঙ্গীকার। সব মানুষ এবং পশু এর অন্তর্ভুক্ত।
অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি পূরণ করা
আর অঙ্গীকার পূরণ করো। নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে (বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৪)।
ওয়াদা ও চুক্তি মানবজীবনের ও মানব সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ওয়াদা বা অঙ্গীকার পূরণ করা না হলে মানুষ পরস্পরের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে এবং তখন গোটা সমাজ দুর্বল হয়ে পড়ে। মুসলমানদের অবশ্যই নিজ নিজ অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে। আমাদের অবশ্য করণীয় অঙ্গীকার হবে সত্য বলা ও সৎ হওয়ার। আর যখন আমরা প্রতিশ্রুতি দেবো, অবশ্যই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবো তা পূরণের জন্য।
ব্যবসায়িক লেনদেনে সততা বজায় রাখা
মেপে দেয়ার সময়ে পূর্ণ মাপে দেবে এবং ওজন করবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়। এটা উত্তম; এর পরিণাম সবচেয়ে শুভ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৫)।
সৎ ব্যবসায় আনে উন্নতি, সাফল্য আর রহমত। বাণিজ্যিক, সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক- সব ধরনের কর্মকাণ্ড সুবিচার ও ন্যায়নীতির অনুভূতির সাথে সম্পন্ন করতে হবে। সব ব্যাপারে এবং সবার সাথে সদাচরণ করতে প্রত্যেক মুসলমান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একজন মুসলমানের সাথে কাজকারবার মানে পুরোপুরি আস্থা রাখা যায় তার ওপর। তাই একজন মুসলিম ব্যবসায়ীর সবচেয়ে সৎ ব্যবসায়ী হওয়া উচিত। একজন মুসলিম শ্রমিক হওয়া উচিত সর্বাধিক সৎ শ্রমিক। যেকোনো পেশার মুসলমান তার পেশার জন্য সম্মান বয়ে আনা উচিত।
জ্ঞানের ভিত্তিতে কাজ করা, গুজব বা অর্ধসত্যের ভিত্তিতে নয়
যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই, কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ- এগুলোর প্রতিটিকেই জিজ্ঞাসা করা হবে (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৬)।
তথ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়ার রয়েছে বিরাট দায়িত্ব। ভুল তথ্য দিলে অথবা তথ্যের অপব্যবহার হলে বিরাট অবিচার করা হয়। তথ্যের সত্যতার ব্যাপারে মুসলমানদের অঙ্গীকার থাকা উচিত। যে কারো সম্পর্কে, এমনকি তাদের শত্রুদের ব্যাপারেও, সত্য রিপোর্টিংকে এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। মুসলিম সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যে রিপোর্ট, তা সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য হওয়া উচিত। একইভাবে, মুসলমানদের সর্বোচ্চ মাত্রায় সতর্ক থাকতে হবে নিজেদের কাজ ও প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে। যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া কারো বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা উচিত নয়।
বিনয়ী হওয়া এবং উদ্ধত না হওয়া
পৃথিবীতে সদম্ভে পদচারণা করো না। নিশ্চয়ই তুমি ভূপৃষ্ঠকে কখনো পারবে না বিদীর্ণ করতে এবং উচ্চতার দিক দিয়ে কখনো পর্বতসম হতে পারবে না (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৭)।
উদারতা, নমনীয়তা ও ভারসাম্য হচ্ছে মানুষের আচরণের সর্বোৎকৃষ্ট বিষয়। একের প্রতি অন্যের মনোভাবের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। একজন মুসলমান মর্যাদাবান মানুষ; একই সাথে তিনি বিনয়ী। কোনো মুসলিম অহঙ্কারী, দাম্ভিক, উদ্ধত হওয়ার কথা নয়। আল্লাহতায়ালার সব দানের জন্য একজন মুসলমান তাকে ধন্যবাদ দিয়ে থাকেন। প্রতিটি জিনিসের জন্য চূড়ান্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্য এবং প্রকৃত গৌরবও তাঁরই প্রাপ্য।
ব্যক্তিপর্যায়ে এবং সামষ্টিকভাবে এগুলো হচ্ছে মুসলমানদের মৌলিক অঙ্গীকার। এগুলো প্রজ্ঞার মূলনীতি এবং ইসলামের বিশ্বজনীন মূল্যবোধ। এসব মূলনীতির অনুসরণ বিশেষ ন্যায়বিচার, শান্তি ও সুখ প্রতিষ্ঠা করবে। একইসাথে পরকালের সফলতা ও মুক্তিও আনবে। আসুন, আমরা সবাই এগুলোকে আমাদের প্রকৃত প্রতিশ্রুতিতে পরিণত করি।