BanglaData.Blogspot.Com

BanglaData.Blogspot.Com

শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫

যেভাবে তৈরি হয় বোর্ড পরীক্ষারপ্রশ্নপত্র

যেভাবে তৈরি হয় বোর্ড পরীক্ষার
প্রশ্নপত্র
প্রক্রিয়াটা
শুরু হয়ে যায়
পরীক্ষা শুরুর
পাঁচ থেকে ছয়
মাস আগে।
সংশ্লিষ্ট
শিক্ষা
বোর্ডের নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
থেকে শিক্ষক বাছাই করার মধ্য দিয়ে শুরু
হয় প্রশ্নপত্র প্রণয়নের প্রাথমিক কার্যক্রম।
প্রতিটি বিষয়ের প্রতিটি পত্রের জন্য
বাছাই করা হয় চারজন অভিজ্ঞ শিক্ষক।
শিক্ষকরা নিজ বোর্ডের প্রশ্ন তৈরি করতে
পারেন না। অর্থাৎ এক শিক্ষা বোর্ডের
প্রশ্ন প্রণয়ন করেন অন্য বোর্ডের
শিক্ষকরা। সাধারণ ধারার প্রশ্ন এভাবে
করা হলেও সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন
প্রণয়ন কার্যক্রমে অংশ নেন সব বোর্ডের
প্রশ্ন প্রণেতারা।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
আব্দুল মান্নান খান জানান, নৈর্ব্যক্তিক
প্রশ্ন সিলেট শিক্ষা বোর্ড প্রস্তুত করলেও
সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সব বোর্ডের পক্ষে
প্রণয়ন করে ঢাকা বোর্ড। প্রথম ধাপে
প্রশ্নকর্তা নিয়োগ করা হয়। প্রশ্নকর্তা
নিয়োগের জন্য সিলেট শিক্ষা বোর্ডের
বাইরে থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয়।
আবেদনকারীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর
নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার পর বোর্ড তাঁদের এ
কাজের দায়িত্ব দেয়।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম এ হুরাইরা
জানান, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি
প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে বোর্ড পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক অন্য বোর্ডের অধিভুক্ত কলেজ
থেকে দক্ষ, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের তালিকা
চান। তাঁদের মধ্য থেকে বিষয়পত্র অনুযায়ী
চারজন শিক্ষককে প্রশ্ন প্রণেতা হিসেবে
নির্বাচন করেন নিজ নিজ বোর্ড পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক। প্রশ্নকর্তাকে সিলেবাস এবং
আগের বছরের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়।
সিলেবাসের আলোকেই প্রশ্নপত্র তৈরি
করেন তাঁরা।
প্রতিটি পত্রের জন্য তৈরি করেন চার সেট
প্রশ্ন। প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন প্রস্তুত করার পর
তা সিলগালা করে পাঠিয়ে দেন বোর্ডে।
এরপর বোর্ড দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু করে।
দ্বিতীয় ধাপে প্রশ্নপত্র মডারেশন করার
জন্য প্রতি পত্রের ক্ষেত্রে চারজন শিক্ষক
নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও
প্রশ্নপত্রের মডারেশনের কাজ করেন অন্য
বোর্ডের শিক্ষকরা। নির্ধারিত দিনে
মডারেটররা শিক্ষা বোর্ড অফিসে হাজির
হন। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়
সিলগালা করা প্যাকেট। মডারেটর
নির্ধারিত কক্ষে বসে সিলগালা তুলে
প্রয়োজনীয় সংশোধন শেষে আবারও
সিলগালা করে বুঝিয়ে দেন বোর্ড
কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিটি প্রশ্ন
মডারেশনের জন্য সাধারণত দুই দিন সময়
পান মডারেটররা। যদিও সাধারণত তার
আগেই এ কাজ শেষ হয়।
এ পর্যায়ে কিছু বিধিনিষেধ মানা হয়।
নির্ধারিত কক্ষে প্রবেশের সময় মোবাইল
ফোন, খাতা, কলম, পেনসিল, বই, রেকর্ডার
বা এ ধরনের কোনো কিছু নিয়ে প্রবেশ
করতে পারেন না মডারেটর শিক্ষকরা।
কক্ষে প্রবেশের পর তাঁরা বাইরে বের হতে
পারেন না। তাঁদের খাবারসহ প্রয়োজনীয়
অনুষঙ্গ সরবরাহ করে বোর্ড। প্রশ্নপত্রে
প্রয়োজনীয় সংশোধন, বিয়োজন,
পরিমার্জন, পরিবর্তন করতে পারেন
মডারেটররা। প্রয়োজনে প্রশ্ন পুরোটাই
বদলে ফেলতে পারেন তাঁরা।
মডারেটররা আলাদা আলাদাভাবে চার
সেট প্রশ্ন চূড়ান্ত করার পর সিলগালা করে
বোর্ডের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার
কাছে হস্তান্তর করেন। সিলগালা
অবস্থায়ই প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় আন্ত
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আন্ত
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব
পালন করেন। আন্ত শিক্ষা বোর্ডের
চেয়ারম্যান অন্যান্য বোর্ডের
চেয়ারম্যানদের ডাকেন। এই ধাপে আয়োজন
করা হয় লটারির। এক বোর্ডের চেয়ারম্যান
অন্য বোর্ডের প্রশ্নপত্র নির্বাচন করেন
লটারিতে। সিলগালা অবস্থায় চারটি সেট
থেকে লটারিতে নির্বাচন করা হয় দুটি
সেট। তবে কোন সেটে কোন প্রশ্ন আছে,
কোন বোর্ডে বিতরণ করা হবে বা কোন
প্রশ্ন কোন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে করা তা
কারো জানা থাকে না।
নির্বাচিত দুই সেট প্রশ্ন সিলগালা
অবস্থায়ই ছাপার জন্য পাঠানো হয়
বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়ে (বিজি
প্রেস)। কোন কেন্দ্রে কত প্রশ্ন লাগবে
তার তালিকা বিজি প্রেসকে সরবরাহ করে
শিক্ষা বোর্ড। চাহিদা অনুযায়ী ছাপিয়ে
প্যাকেটজাত করে প্রশ্ন সিলগালা অবস্থায়
পাঠানো হয় জেলা প্রশাসকের কাছে।
ট্রাংকভরা প্রশ্নপত্রগুলো উপজেলা
পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তার ট্রেজারিতে
রাখা হয়। নিরাপত্তা বা ভৌগোলিক
অবস্থানের কারণে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ
ফাঁড়ি বা ব্যাংক লকারে রাখা হয়
প্রশ্নপত্র। পরীক্ষার দিন সকালে কেন্দ্রের
ভারপ্রাপ্তরা ট্রাংকের ভেতরে দেওয়া
নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সেটের
প্রশ্নপত্র নির্ধারিত কেন্দ্রে সরবরাহ
করেন। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রশ্ন গ্রহণ
করেন কেন্দ্র সচিব। প্রতিষ্ঠানের প্রধান
কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ
সময় পাহারায় থাকেন নিরাপত্তা
বাহিনীর সদস্যরা।
প্রতিটি ধাপে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও
গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রতিবছর পাবলিক
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ করা হয়
বলে জানান চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ
মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক ড. পীযূষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘একেক
সময় একেকজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করেন।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কমিটির সদস্য বা বোর্ড
কর্মকর্তাদের কারো জানার উপায় থাকে
না কোন সেটে কোন প্রশ্ন।’
সূত্র: কালের কণ্ঠ

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন