BanglaData.Blogspot.Com

BanglaData.Blogspot.Com

রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৬

জুমার নামায কতো রাকাত? Answer By আবদুস শহীদ নাসিম

জুমার নামায কতো রাকাত?
------------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
--------------------------
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম, একটা বিষয় নিয়ে খুব দ্বিদ্বাগ্রস্ত আছি, তা হলো জুমার নামায কতো রাকাত? কাবলাল জুমার চার রাকাত ও জুমার পরের চার রাকাত নামায কি সুন্নাত? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার নামায কিভাবে ও কতো রাকাত পড়তেন? জানালে খুব উপকৃত হবো। ধন্যবাদ। @Nasir Nazim
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। হাদিস থেকে জানা যায়, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে সরাসরি জুমার ফরয দুই রাকাত পড়াতেন। তারপর দুই বা চার রাকাত সুন্নত নামায পড়তেন। তিনি জুমার ফরয নামাযের আগে জুমার কোনো সুন্নত নামায পড়েছেন বা পড়তে বলেছেন বলে প্রমাণ নেই। তবে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায পড়তে বলতেন-যা জুমার নামাযের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
কিছু কিছু ফকীহ্ মনে করেন, জুমার নামায যুহর নামাযের বিকল্প, তাই তাদের মতে যুহরের মতো জুমার ফরযের আগেও সুন্নত নামায পড়তে হবে।
এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রহ. তাঁর সুন্নতে রসূল সংক্রান্ত বিখ্যাত গ্রন্থ 'যাদুল মায়াদে' লিখিছেন:
"তাই যারা যুহর নামাযের উপর কিয়াস করে জুমার পূর্বেও সুন্নত আছে বলে ধরে নেন, তাদের কিয়াস বাতিল। কারণ সুন্নত তো প্রমাণিত হতে হবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা, কাজ ও সমর্থন থেকে, কিংবা খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে। কিন্তু এখানে সেরকম কোনো প্রমাণ নেই।
বরং জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায না পড়ার সুন্নতই রসূল সা. থেকে প্রমাণিত। যেমন, ঈদের নামাযের আগে পরে আর কোনো নামায না পড়াই তাঁর থেকে প্রমাণিত। সুতরাং জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায না পড়াটাই সুন্নত।
যারা জুমার পূর্বে সুন্নত নামায আছে বলে ধারণা করেন, তাঁরা বুখারির ‘জুমার আগে-পরে নামায' অনুচ্ছেদের একটি হাদিসকে দলিল হিসেবে পেশ করেন। এই অনুচ্ছেদে ইমাম বুখারি সনদসহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। তাতে তিনি বলেন : 'রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -
যুহরের পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
যুহরের পরে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
মাগরিবের পরে তাঁর ঘরে দুই রাকাত নামায পড়তেন,
ইশার পরে দুই রাকাত নামায পড়তেন এবং
জুমার পরে ঘরে এসে দুই রাকাত নামায পড়তেন।'
এই হাদিসটি জুমার নামাযের পূর্বে সুন্নত নামায থাকার প্রমাণ করেনা। হাদিসটি থেকে পরিষ্কার বুঝা যায়, ইমাম বুখারি হাদিসটির শিরোনাম ‘জুমার আগে পরে নামায' দেয়ার অর্থই হলো, যারা মনে করে জুমার আগে নামায আছে, তাদের ধারণা ঠিক নয়।
বুখারির এই হাদিসটি থেকে একথাও সুপ্রমাণিত হয় যে, জুমার নামায যুহরের সংক্ষিপ্ত রূপ নয়, রবং সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নামায। হাদিসে জুমার নামাযকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নামায হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবু দাউদে নাফে রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন: ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমার আগে লম্বা নামায পড়তেন এবং জুমার পরে ঘরে গিয়ে দুই রাকাত নামায পড়তেন।
এই হাদিস জুমার আগে সুন্নত নামায থাকা প্রমাণ করেনা। ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমার আগে যে লম্বা নামায পড়েছেন, তা ছিলো সাধারণ নফল নামায। আযান দেয়া বা ইমাম আসার আগে যে ব্যক্তিই মসজিদে হাযির হবে, তার নফল নামায পড়তে থাকা উত্তম।"
---------------------
০৩.০১.২০১৬ খ্রি.

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন